আমাদের শাস্ত্রে স্বর্গ নরক সম্পর্কে একটি ধারণা আছে। কথিত আছে এই জগতে যারা পূণ্যবান তারা মৃত্যুর পর স্বর্গে গমন করে এবং অনাবিল সুখ ভোগ করে। কিন্তু এই পৃথিবীতে যারা অত্যাচারী, পাপী মানুষ তারা মৃত্যুর পর পাপ কর্মের প্রায়শ্চিত্তের জন্য নরকে যায় এবং অপরিসীম যন্ত্রণা ভোগ করে, যে যন্ত্রনা অকল্পনীয়।
স্বর্গ- নরক সত্যিই আছে কিনা তার প্রমাণ যেহেতু আজও পাওয়া যায়নি। তাই স্বর্গ নরক দুই-ই কাল্পনিক ব্যাপার। প্রকৃতপক্ষে এই পৃথিবীর পার্থিব সমাজেই রয়েছে স্বর্গ নরক। যখন মানুষ অপরকে সাহায্য করে, অন্নহীনকে অন্নদান করে, গৃহহীন কে গৃহ দান করে, বস্ত্রহীন কে বস্ত্র দান করে এবং সেই দানে যদি হৃদয়ে স্পর্শ থাকে তবে দাতা ও গ্রহীতা উভয়ই স্বর্গীয় সুখ লাভ করে। মানুষকে ভালবাসার মধ্যে হৃদয়ের যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে তা স্বর্গীয়। শিশুর মুখে আধো আধো হাসি, মায়ের-ভালোবাসা এইসব কিন্তু স্বর্গীয় আনন্দ বহন করে আনে।
অন্যদিকে মানুষ যখন অপমাণিত, নির্যাতিত ও নিপীড়িত হয় তখন মানুষ নরক দর্শন করে। দরিদ্র, শোষিত, নিপীড়িত মানুষের উপর যখন অত্যাচারের বোঝা চাপে তখন অত্যাচারিত মানুষ যে যন্ত্রণা ভোগ করে তা নরক যন্ত্রণার সমান। আবার অত্যাচারী মানুষ যখন বিবেকের দংশন অনুভব করে তখন সে নরকের যন্ত্রনা ভোগ করে। তাই স্বর্গ-নরক এই দুই পার্থিব জগতে বর্তমান ।
এই পৃথিবীতে স্বর্গীয় আনন্দ ভোগ করার জন্য প্রতিটি মানুষের উচিত প্রেম-ভালোবাসা ও মৈত্রীর বন্ধনে মিলিত হওয়া। প্রীতি ও ভালোবাসার দ্বারাই সকল সুখ গড়ে ওঠে। তাই প্রতিটি মানুষের উচিত সকল ভেদাভেদ ভুলে অপরকে ভালোবাসা। ভালবাসার সেই ক্ষমতা আছে যা মানুষের দুঃখ দূর করতে পারে।