শৈবাল দিঘিরে বলে উচ্চ করি শির লিখে রেখো, এক ফোঁটা দিলেম শিশির।

দিঘিতে জন্মগ্রহণ করা অন্যান্য উদ্ভিদের মধ্যে অন্যতম হল শৈবাল। দিঘিতে শৈবাল এর জন্ম এবং এটি তার বাসস্থান ও বটে। কিন্তু যখন শৈবালের উপর শিশির পড়ে তখন তা দিঘির অতল জল রাশির মধ্যে প্রদান করে ক্ষুদ্র শৈবাল। অহংকার স্পিত চিত্তে শির উচু করে তার এই এক ফোটা জল প্রদানের কথা ঘোষণা করে দিঘিকে এই কথা লিখে রাখতে বলে। যা তার সংকীর্ণ চিত্তের পরিচায়ক।


আমাদের এই পৃথিবীতে বিভিন্ন ধরনের মানুষ আছে। তাদের মধ্যে এক ধরনের হলো অহংকারী শ্রেণী যুক্ত। যদিও তাদের সামর্থ্য অত্যন্ত ক্ষুদ্র ,তবুও এই ক্ষুদ্র সামর্থ্যই এই অহংকার এর জন্মদাতা। এটি তাদের অহংকারের পরিপোষক ও বটে। এইসব অহংকারী মানুষেরা অন্য কোনো মানুষ বা এই পৃথিবীর কাছ থেকে পাওয়া অনেক উপকারের এক ভগ্নাংশ ফিরিয়ে দিলে সেই প্রতিদানের কথা উচ্চস্বরে ঘোষণা করে ।সে তার দান কে গগনচুম্বী মহিমায় সুপ্রতিষ্ঠিত করতে চায়। যা বহু ক্ষেত্রে হাস্যস্পদ ।


এই সমস্ত অহংকারী মানুষেরা নিজেদের প্রতিদানের বাস্তবমূল্য অপেক্ষা অনেক বেশিমূল্য আশা করে। ফলে তাদের দান কখনোই নিঃস্বার্থ হয়ে উঠতে পারে না ।তাই তারা নিজেদের পরোপকারী, কৃতজ্ঞ, কর্তব্যসচেতন বলে বারবার প্রতিষ্ঠা করতে চাইলেও নিজেদের অজান্তে তাদের অহংকারী, সংকীর্ণ, কৃতজ্ঞ মনের নগ্নরুপিই বারবার প্রকাশিত হয়ে পড়ে সকলের সামনে। বস্তুতপক্ষে অহংকারবিহীন একজন মানুষের দান যতই ক্ষুদ্র হোক তা সকলের কাছেই গ্রহণযোগ্য । কিন্তু অহংকারী মানুষের দান অতি বড় হওয়া সত্ত্বেও তাদের সংকীর্ণ অহংকারীচিত্তের জন্য তা কখনো কারোর কাছে গ্রহণীয় হয়ে ওঠে না। দুঃখের বিষয় আমাদের এই পৃথিবীতে এই ধরনের মানুষের সংখ্যাই বেশি ।

Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x
Scroll to Top