কেরোসিন শিখা বলে মাটির প্রদীপে, ভাই বলে ডাকো যদি দেব গলা টিপে। হেনকালে গগনেতে উঠিলেন চাঁদা, কেরোসিন শিখা বলে ‘এসো মোর দাদা।’

সূর্যাস্তের পর ঘরকে আলোকিত করার জন্য জ্বালা কেরোসিনের শিখা মাটির প্রদীপের আত্মীয় সুলভ আহ্বানকে তাচ্ছিল্য করে। তাকে মৃত্যুর ভয় দেখায় । এই ঘটনার কিছু সময় পরে যখন আকাশে চাঁদের উদয় হয় যা কেরোসিনের প্রদীপের থেকে অপেক্ষাকৃত বেশি উজ্জ্বল , তখন কেরোসিনের প্রদীপ তাকে দাদা বলে আহ্বান করে। আকাশে উদিত চন্দ্রালোককে পৃথিবীকে আলোকিত করার জন্য স্বাগত জানায় ।

পৃথিবীর প্রতিটি ব্যক্তি সমান ক্ষমতাসম্পন্ন বা সমান বিত্তশালী হয় না। কিন্তু বিত্তশালী ও ক্ষমতাবান ব্যক্তিগণ নিজেদের ক্ষমতার অহংকারে অন্ধ হয়ে এদের থেকে অপেক্ষাকৃত কম ক্ষমতা সম্পন্ন বিত্তশালী লোকেদের নিচ বলে মনে করে। তাদের সঙ্গে এক অবাঞ্চিত দূরত্ব সৃষ্টি করে নেয় । তারা নিজেদের অপেক্ষাকৃত কম বিত্তশালী ব্যক্তিদের তুলনায় অধিক উচ্চতার বলে মনে করে। আর যার ফলস্বরুপ এই দুই শ্রেণীর মধ্যে এক অদ্ভুত দূরত্বের সৃষ্টি হয়। এই উচ্চ ক্ষমতা ও বিত্তসম্পন্ন ব্যক্তিগণ তাদের অহমিকার অন্ধ হয়ে তাদের থেকে কম ক্ষমতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের নিজেদের থেকে হীন, নীচ ও অপাংক্তেয় মনে করে নিজেদের মধ্যে মিথ্যা ভেদাভেদের প্রাচীর গড়ে তোলে ।

অথচ এইসব ব্যক্তিগণ তাদের থেকেও উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ও বিত্তবান ব্যক্তিবর্গের সংস্পর্শে এসে নিজেদের অস্তিত্বের কথা ভুলে গিয়ে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করে। যার ফলে তারা মুখের মিথ্যা হাসি ও চারটি চাটুকারীতার দ্ধারা তাদের মন জয়ের চেষ্টা করে । যা তাদের সংকীর্ণ ও হীন মনের পরিচয় বহন করে। কিন্তু তারা এ বিষয়ে ওয়াকিবহাল বা সচেতন নয়।

Subscribe
Notify of
guest
1 Comment
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
1
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x
Scroll to Top